গর্ভাবস্থায় পুঁইশাক খাওয়া যাবে কি- বিস্তারিত জানুন

আপনি যদি জানতে চান গর্ভাবস্থায় পুঁইশাক খাওয়া যাবে কি না তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন। আপনার এবং আপনার বাচ্চার জন্য পুঁইশাক কতটা উপকারী ও কতটা অউপকারী আপনার বাচ্চার জন্য তাই এই পোষ্টের মাধ্যমে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

গর্ভাবস্থায়-পুঁইশাক-খাওয়া-যাবে-কি

পুইশাক গাছ মূলধন চাষ করতে হয় না বাড়ির আনাচে-কানাচে এর দেখা পাওয়া যায়। পুঁইশাক গাছ দ্রুত বড় হয়, পুঁইশাকের পাতা, ডাটা এবং পুইশাকের বিচিও খাওয়া যায়। অন্যান্য সবজির তুলনায় এই সবজি  নষ্ট কম হয়। আমাদের দেশের সারা বছরই পুঁইশাক পাওয়া যায়।

সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় পুঁইশাক খাওয়া যাবে কি না বিস্তারিত 

 

ভূমিকা

গর্ভবস্তায় খাদ্যভ্যাসের সঠিকতা মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। প্রতিটি খাবারের উপাদান পুষ্টিগুণ এবং সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া বিবেচনায় নিতে হয়। গর্ভবস্থায় একজন নারীর প্রতিটি খাবারে খুব হিসাব করে খেতে হয়। যেটা আগে খাওয়া হতো সহজে এখন সেটা নিও ভাবতে হয়। এটা কি বাচ্চার জন্য ঠিক পুঁইশাক আমাদের রান্নাঘরের এক পুষ্টির উপাদান। কিন্তু গর্ববস্থায় এটি খাওয়া কি নিরাপদ এ নিয়ে মূলত আজকের বিস্তারিত আলোচনা।

গর্ভাবস্থায় পুঁইশাক খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় পুঁইশাক খাওয়া যায়। কাঁচা শাকে কীটনাশক,মাটি বা পরজীবী থাকতে পারে যা গর্ভাবস্থায় সংক্রমণের কারণ হতে পারে। তবে অবশ্যই পরিমাণ মতো ভালোভাবে ধুয়ে ও সিদ্ধ করে খেতে হয়। প্রত্যেক গর্ভবতী নারীর শারীরিক অবস্থা আলাদা থাকে। তাই একজন খেতে পারে, অন্যজন খেতে পারে না সেটা তার জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। শরীরে যদি আগে থেকে কোন সমস্যা থাকে তাহলে খাবারের আগে দরকার পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষ করে যাদের পুঁইশাকে এলার্জি সমস্যা আছে। 

গর্ভাবস্থায় পুঁইশাক খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভবতী নারীদের জন্য শুধু  উপকারীতা নয় পুঁইশাক, এটি সবার জন্য উপকারী। গর্ভবস্থায় প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। কেননা এসব সবজি দিয়ে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন মিনারেলসহ উপকারী ডায়েটেরি ফাইবর। সবুজ শাকগুলোর মধ্য অন্যতম পুঁইশাক। প্রতি ১০০ গ্রাম পুঁইশাকে রয়েছে ১৯ কিলোক্যালরি শক্তি। যা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলার দৈনিক শক্তির ০.৮৩% পূরণ করে। এবং একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দৈনিক শক্তির ০.৭৬% পূরণ করে। একজন গর্ভবতী মহিলার দৈনিক শক্তির ০.৮৬% পূরণ করে।

আরো পড়ুনঃ

একজন গর্ভবতী মাকে দৈনিক সর্বনিম্ন ৮৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করতে বলা হয় এবং সর্বোচ্চ ২০০০ কিলোগ্রাম গ্রহণ করতে পারবে। ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করেন পুঁইশাক। আমাদের দেশে প্রায় ৯০ ভাগ গর্ভবতী মা রক্তশূন্যতায় দেখতে পাওয়া যায়। ভিটামিন সি রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রেগে রক্তশূন্যতা রোধ করেন।যেহেতু বৈশাখ সারাবছর জুড়েই পাওয়া যায় তাই খাদ্য তালিকায় পুঁইশাক রাখতে পারেন। পুইশাকের পর্যাপ্ত পরিমাণের আয়রন রয়েছে। আয়রন রক্তশূন্যতা রোধে অত্যন্ত কার্যকারী তাছাড়া পুঁইশাকে রয়েছে জিংক যা বাচ্চা খাটো হওয়ার হাত থেকে বাঁচায়। গর্ভকালীন ক্রান্তি ও অবসন্নতা রোধেয় জিংক অত্যন্ত কার্যকারি।

পুঁইশাক খেলে কি হয়

চলেন জেনে নেওয়া যাক পুঁইশাক খেলে কি হয়।
  • হাড় মজবুত করে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
  • হজম শক্তির উন্নত করে
  • কোন্ঠ-কাঠিন্য দূর করে
  • রক্তশূন্যতা দূর করে
  • ত্বক উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর রাখে
  • হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
  • লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ করে 
  • ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে   

পুঁইশাক খেলে কি ওজন বাড়ে 

পুইশাকে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম থাকে তাই পুঁইশাক খেলে ওজন বাড়ে না বরং ওজন কমাতে সাহায্য করে। পুঁইশাকে ভিটামিন এ ভিটামিন সি আয়রন এবং ক্যালসিয়ামসহ বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ  থাকে যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে পুঁইশাক খেলে পেট ভরা থাকে এবং সহজে খিদে লাগে না। যাদের অতিরিক্ত ওজন রয়েছে তারা নিয়মিত পুঁইশাক খেলে উপকৃত হতে পারেন। পুঁইশাক একটি স্বাস্থ্যকর সবজি যা ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে। 

পুঁইশাক খেলে কি গ্যাস হয়

মানুষ ভিন্ন তাই তাদের সমস্যাটাও ভিন্ন হবে এটাই স্বাভাবিক। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে পোশাক খেলে গ্যাস হয় আবার কিছু মানুষের ক্ষেত্রে গ্যাস হয় না। বিশেষ করে যাদের ক্ষেত্রে গ্যাস বা বদহজমিনের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য পোশাক খেলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। যাদের প্রিয় নেইক এসিডের সমস্যা আছে তাদেরও পুঁইশাক এড়িয়ে চলা উচিত। পুঁইশাকে আছে ভিটামিন এ, সি এবং আয়রনের তাই যাদের পেটে কোনো সমস্যা নেই। তারা পুঁইশাক নিশ্চিন্তে খেতে পারেন। 

পুঁইশাক দিয়ে মসুর ডাল রান্না 


পুঁইশাক দিয়ে মসুর ডাল রান্নার উপকরণ:
  • পুঁইশাক
  • মসুর ডাল
  • পেঁয়াজ
  • রসুন
  • শুকনা মরিচ
  • হলুদের গুড়া
  • লবণ
  • সরিষার তেল
  • পানি
উপরের সব উপকারগুলা আপনার সবজিও ডালের পরিমাণ দেখে নিয়ে দিবেন।

আরো পড়ুনঃ

রান্নার ধাপ:
  • প্রথমে ডাল ধুয়ে সিদ্ধ করে রাখুন|
  • কড়াইয়ে তেল দিয়ে গরম করে রসুন, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ দিয়ে ভালো করে ভাজুন|
  • আদা বাটা দিন নেড়েচেড়ে শাক যোগ করুন|
  • ঢেকে কিছুক্ষণ রাখার পর ডাল মেশান|
  • ৬-৭ মিনিট ফুটিয়ে নিন।
  • স্বাদমতো লবণ দিয়ে খাবার পরিবেশন করুন। ল 

পুঁইশাকে কি এলার্জি আছে

আপনারা অনেকেই জানতে চান পুঁইশাকে কি এলার্জি আছে। পুঁইশাকে কিছু উপাদান রয়েছে যার ফলে অনেকের এলার্জি দেখা যায়। পুঁইশাক খাওয়ার পরে আপনার শরীরের চুলকানি, গাঁ হাত পা ফুলে যাওয়া  আরও আরো বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ যদি আপনার শরীরের মধ্যে দেখতে পান তাহলে পোশাক খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আর যাদের পুঁইশাকে এলার্জি নেই তারা নিঃসন্দেহে খেতে পারেন কারণ পুঁইশাকে রয়েছে ভিটামিন এ,সি, পর্যাপ্ত পরিমাণের আয়রন ও ক্যালসিয়াম।

পুঁইশাকের বীজের উপকারিতা 

জেনে নেওয়া যাক পুঁইশাকের বীজেতে কি উপকারিতা আছে।খাবারে পুঁইশাকে বীজের সঙ্গে পুঁইয়ের ডাঁটা থাকলে তাতে আঁশের পরিমাণ বাড়ে। একই সঙ্গে রক্তের খারাপ চর্বির মাত্রা থাকলে নিয়ন্ত্রণে আনে। পুইশাকের বীজে থাকা ভিটামিন এ আপনার ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। চোখের স্বাস্থ্যোর জন্য ভিটামিন এ প্রয়োজন । পুঁইশাকের বীজ খেলে যে আপনি উপকারিতা পাবেন ব্যাপারটা এমন নয়। পুঁইশাকের বীজে খানিকটা নিজস্ব পুষ্টিগুণ তো আছেই। সবটা মিলিয়ে আপনি সুস্থ থাকবেন।

লেখকের শেষ কথা 

আশা করি উপরের আলোচনা থেকে জানতে পেরেছেন পুইশাকের উপকারিতা সম্পর্কে ও অপকারিতা সম্পর্কে| আপনারা স্পষ্ট ধারণা পেয়ে গেছেন পুইশাকের বীজে উপকারিতা কি। আপনারা যদি পুইশাকের  ভালো দিকগুলো এবং খারাপ দিকগুলো জানতে পারেন তবে তা আপনাদের জন্য অনেক উপকারি হবে। কেননা আপনারা পুইশাকের অউপকারিতা জানার মাধ্যমে এর খারাপ দিক বর্জন করতে পারবেন এবং উপকারিতা জানা থাকলে এর ভালো দিক গ্রহণ করতে পারবেন।

আপনি যদি উপরে প্রতিটি লাইন মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন, তাহলে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে গেছেন।
মনে রাখবেন পুঁইশাক খাওয়ার সময় অবশ্যই পুইশাকের বীজ ফেলে দেবে না।কেননা পুইশাকের বীজেও উপকারিতা রয়েছে এবং গর্ভবতী মায়েদের কোন সমস্যা না হলে অবশ্যই খাবার পুঁইশাক রাখতে পারেন। নতুন নতুন পোস্ট পেতে সাথে থাকুন এবং অন্যদেরকে জানাতে এই পোস্টটি শেয়ার করুন। ধন্যবাদ





এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নাইস-সল্ভ; আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url