রূপচর্চায় আলুর রস যেভাবে ব্যবহার করে বিদেশীরা
রূপচর্চায় আলুর রস যেভাবে ব্যবহার করে বিদেশীরা। আলুর কথা শুনলে বিভিন্ন
খাবারের কথা মনে পড়ে যায়। কিন্তু এটি যে ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী এ কথা কি
আপনি জানেন? আজকের এই পোস্টটিতে থাকছে রূপচর্চায় ও চুলের যত্নে আলুর
ব্যবহার।
একটু বাইরে দেশের কথা বলি যেমন:কোরিয়ায় কিংবা চীন জাপানে এই আলোকে বিভিন্ন
রূপচর্চার বেশি ভালোভাবে কাজে লাগানো হয়।কিন্তু কিভাবে আলুকে কাজে
লাগিয়ে কিভাবে কোরিয়ান কিংবা চীন জাপানের মেয়েরা সুন্দর ত্বকের অধিকারী
হয়েছে জানা যাক।
সূচিপত্রঃ ত্বকের জন্য আলুর প্রয়োজনীয়তা
- ত্বকের জন্য আলুর প্রয়োজনীয়তা
- কিভাবে আলুর রস ব্যবহার হয়
- সরাসরি আলুর রস ব্যবহার কররে কি হয়
- এক মাসে ত্বকের পরিবর্তন
- চুলের যত্নে আলুর প্রয়োজনীয়তা
- কিভাবে আলুর রস ব্যবহার করবেন চুলের যত্নের
- ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা
- রাতে অ্যালোভেরা ব্যবহারের উপকারিতা
- অ্যালোভেরা কি কালো দাগ দূর করতে পারে
- লেখকের শেষ কথা
ত্বকের জন্য আলুর প্রয়োজনীয়তা
আলু এক ধরনের সবজি। আলুতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উপাদান যা ত্বকের জন্য ভালো
যেমন ভিটামিন সি, ভিটামিন বি,পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম, খনিজ, ফসফরাসের মতো
প্রয়োজনীয় উপাদান।এসব উপদান আপনার ত্বকে ভিতর থেকে উজ্জ্বল করে ও
ভিতর থেকে উজ্জ্বল বাড়াই। দুশ্চিন্ত বা অনিদ্রায় আমাদের চোখের নিচে যে কালো
দাগ তৈরি হয় তা নিমিষেই দূর করা যায় এই আলুর মাধ্যমে।
আরো পড়ুনঃ
আমরা জানি সময়ের এর সাথে আমাদের বয়স বাড়ে।চেহারার সৌন্দর্যকে ধরে রাখতে
চাইলে নিয়মিত রূপচর্চা করতে হবে। আলু ব্যবহার করেন তাহলে আপনি আপনার
সৌন্দর্য ধরে রাখতে সক্ষম হবেন। অনেকে গায়ের রং ফর্সা করার জন্য ব্লিচ
ব্যবহার করে থাকেন। এর কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক মারাত্মক। তাই
সরাসরি ত্বকে ব্যবহার না। প্রাকৃতিক আলু ব্যবহার করতে পারেন।
কিভাবে আলুর রস ব্যবহার হয়
এবার উপায় জানিয়ে দিচ্ছি। আলু থেকে রস তৈরি করতে হলে প্রথমে আপনাকে যে
কাজটি করতে হবে তা হলো আলু কুচিয়ে তাতে চাপ দিয়ে রস বের করে নিন। এবার
আপনার যদি কোথাও ব্রণ এর দাগ থাকে তাহলে আলুর সাথে কাঁচা দুধ মিশেয়ে
নিন। যদি এলো ভালো ফলাফল পেতে অলিভ অয়েল নিন। ত্বক থেকে বয়সের ছাপ দূর করতে
হলে আপনাকে আলুর সাথে গ্লিসারিন মিশিয়ে নিতে হবে। আর যদি গায়ের রং ফর্সা বা
উজ্জল করতে চান তাহলে আলুর রসের সজ্ঞে মিশিয়ে নিন লেবুর রস।
সরাসরি আলুর রস ব্যবহার কররে কি হয়
মুখে সরাসরি আলুর রস লাগালে বেশ কয়েকটি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ত্বকের
জন্য সঠিক উপাদান মুখে ব্যবহার করুণ। ভ্রান্ত ধারণার উপর ভিত্তি করে মুখে
যা ইচ্ছে তাই ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকুন। এতে করে কোনো উপকার হবে না
ত্বকের বাজে অবস্থা হবে। যেমনঃ
- ত্বকে চুলকানি হতে পারে।
- লাল হয়ে যেতে পারে ত্বক।
- ত্বকের কোনো অংশ ফুলে উঠতে পারে।
- এলার্জিজনিত সমস্যার বড় আকার নিতে পারে।
- মুখে পড়তে পারে কালচে ছোপ।
এক মাসে ত্বকের পরিবর্তন
রূপচর্চায় আলুর রসকে ব্যবহার করতে হলে আপনাকে অবশ্যই এর পরিমাণ জানতে
হবে।যদি আপনি ২ চামচ আলুর রস নেন তাহলে তার সজ্ঞে দুধ,গ্লিসালিন , অলিভ
অয়ের কিংবা লেবুর রসও ২ চামচ পরিমাণই মিশাতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারে এক মাসের
মধ্যেই আপনি আপনার পরিবতণ দেখতে পাবেন।
চুলের যত্নে আলুর প্রয়োজনীয়তা
উপরে আমরা জেনে এসেছি ত্বকের যত্নে আলুর প্রয়োজনীয়তা, এবার জানবো চুলের
যত্নে আলুর প্রয়োজনীয়তা। চুলের নানা সমস্যা দূর করে থাকে আলুর রস।আলুতে
রয়েছে ভিটামিন সি, জিঙ্ক, নিয়াসিন ও আয়রন।এই পুষ্টিগুলি চুলের
বৃদ্ধিতে সাহায্য করে ও চুলের ফলিকলে পুষ্টি যোগায়। আলুর রস স্ক্যাল্প
পরিষ্কার রাখে, খুশকি কমায় এবং চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াই।
কিভাবে আলুর রস ব্যবহার করবেন চুলের যত্নের
- আলু, মধু ও ডিম দিয়ে বানাতে হবে প্যাক। আলু কেটে ব্লেড করে নিন। আলুর রসের সঙ্গে মেশান মধু ও ডিমের সাদা অংশ। ভালো করে ফেটিয়ে নিন চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ভালো করে লাগিয়ে নানি। লাগানো হয়ে গেলে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।
আরো পড়ুনঃ
- আলু ও অ্যালোভেরা দিয়ে বানাতে পারেন প্যাক। অ্যালোভেরা গাছের পাতা কেটে ব্লেড করে নিন।তারপার অ্যালোভেরার সঙ্গে আলুর রস মেশান। ভালো করে সমস্ত চুলে রাগিয়ে রাখুন, ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন। চুল হবে নরম ও ঝলমলে।
- সমপরিমাণ আলু ও পেঁয়াজের রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগান ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে নিন নিয়মিত ব্যবহারে চুল পড়া কমে যাবে।
ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা
ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা ব্যবহারে যেমন অনেক উপকার পাওয়া যায়, তেমনি কিছু
অপকারিতা রয়েছে। তাই জেনে নেওয়া দরকার এর সঠিক ব্যবহার ও
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
অ্যালোভেরার উপকারিতাঃ
- অ্যালোভেরা ত্বকের জ্বালাভাব কমাতে সাহায্য করে। রোদে পোড়া ত্বকে এটি দারুণ উপকারী।
- এটি ত্বকে হাইড্রেট করে এবং নরম, মসৃণ ও তৈলাক্তমুক্ত রাখে।
- ব্রণ ও দাগ হ্রাস করে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ থাকায় এটি ব্রণ ও পিম্পল প্রতিরোধে কার্যকর।
- নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক আরও উজ্জ্বল ও ফ্রেশ দেখায়।
আরো পড়ুনঃ
অ্যালোভেরার অপকারিতাঃ
- এলার্জির কারণে সব ত্বকে একই কাজ করে না। কারো কারো ত্বকে র ্যাশ, চুলকানি বা জ্বালাভাব দেখা দেয়।
- অনেক বাজারজাত অ্যালোভেরা জেলে কেমিক্যাল থাকে, যা ত্বকের ক্ষতি করে।
- খুব বেশি ব্যবহারে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
রাতে অ্যালোভেরা ব্যবহারের উপকারিতা
রাতের স্কিন কেয়ারে অ্যালোভেরা ব্যবহার করতে এটি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে
কাজ করে। রাতের বেলা ত্বক বেশি শুষ্ক হয়ে যায়, অ্যালোভেরা ব্যবহার করলে
এটি ত্বকের ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচায় এবং ময়েশ্চার ধরে রাখে।যারা কম ঘুমান
তাদের চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যায়। অ্যালোভেরা চোখের চারপাশে ঠাণ্ডা
রাখে এবং ডার্ক সার্কেল কমাতে সাহায্য করে। যদি আপনার ত্বকে অতিরিক্ত
রোদে পড়া দাগ থাকে, তাহলে রাতের বেলা ব্যবহার করুন। এটি দ্রুত ত্বকের
ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।
অ্যালোভেরা কি কালো দাগ দূর করতে পারে
নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের দাগ, রোদে পড়া ও কালো দাগ দূর করতে পারে। তবে
ধৈর্য ধরতে হবে এবং প্রতিদিন ব্যবহার করতে হবে। অ্যালোভেরা জেল মুখে
ব্যবহারের নিয়মঃ
- প্রথমে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
- অ্যালোভেরা জেল পাতলা স্তর করে মুখে লাগান।
- ১৬-২০ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
- সপ্তাহে ৩-৪ বার ব্যবহার করুন।
লেখকের শেষ কথা
প্রিয় পাঠকগন আপনি যদি আমার লেখা লাইনগুলো যদি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন
তাহলে এতক্ষণে উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।
রূপচর্চাই যেসব উপাদানের কথা বলা হয়েছে ও যেভাবে ব্যবহার করতে বলা
হয়েছে যেভাবে ব্যবহার করলে আশা করা যায় ভালো ফলাফলের। যাদের ত্বকের
সমস্যা আছে তাই এসব বিউটি টিপস থেকে বিরত থাকুন। সম্ভাব্য হলে
ডাক্তারের পরামর্শে ক্রিম বা ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন।
ধন্যবাদ
নাইস-সল্ভ; আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url