দুর্গা পূজার সরকারি ছুটি কবে-২০২৫ বিস্তারিত
দুর্গা পূজার সরকারি ছুটি কবে তা আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন। সরকারি ছুটির ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শুধু দুর্গাপূজায় নয় অন্যান্য ধর্মীয় ও জাতীয় দিবসের ছুটির তারিখ ও আগেই প্রকাশ করা হয়। ফলে মানুষ নিজের সময়সূচী পারিবারিক আয়োজন বা ভ্রমণের পরিকল্পনা আগে থেকেই ঠিক করতে পারে।
আমাদের হিন্দু ভাই-বোনদের কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এই সময়টাতে পূজার আনন্দ পরিবারের সাথে ভাগ করে নেওয়ার সুযোগ পাওয়া যায় এবং উৎসব আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। আগে থেকে ছুটির দিনগুলো জানা থাকলে উৎসব উদযাপন আরো আনন্দময় হয়ে ওঠে।
সূচিপত্রঃ দুর্গা পূজার সরকারি ছুটি কবে-২০২৫ বিস্তারিত জানুন
- দুর্গা পূজার সরকারি ছুটি কবে-২০২৫ বিস্তারিত জানুন
- দুর্গ পুজার অনুষ্ঠান ও সাজসজ্জা
- দেবী দুর্গার মহিলা ও দুর্গা পূজার ইতিহাস
- মহালয়া দুর্গোৎসবের সূচনা
- দুর্গা পূজা ২০২৫ সালের সময়সূচি
- দুুুুর্গা পূজার প্রস্তুতি কেমন হয়
- দুর্গা পূজা উদযাপনের পার্থক্য বাংলাদেশ ও ভারত
- দুর্গা পূজার ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা
- লেখকে মন্তব্য
দুর্গা পূজার সরকারি ছুটি কবে-২০২৫ বিস্তারিত জানুন
দুর্গা পূজার সরকারি ছুটি কবে তা নিয়ে থাকচ্ছে আজকের আর্টিকেল। বাংলাদেশের হিন্দু সম্পাদনের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হলো দুর্গা পূজা প্রতিবছর শারদীয়া নবরাত্রি সময়ে এই উৎসব পালিত হয় এবং সরকারি ছুটিও ঘোষণা করা হয়। যাতে সবাই পরিবার ও প্রিয়জনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারে। দুর্গা পূজায় সরকারি ছুটি কবে ২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী ২৯ সেপ্টেম্বর সপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর অষ্টমী, ১ অক্টোবর মহানবমী এবং ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে ছুটি থাকবে। ফলে পূজার প্রধান চার দিনের মধ্যে দুদিন সরকারি ছুটি এবং দুদিন ঐচ্ছিক ছুটি থাকবে।
সাধারণত সরকারি অফিস, ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অনেক জায়গায় এই দিনগুলোতে ছুটি থাকে। একইভাবে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সুবিধার্থে ছুটি দিয়ে থাকে যাতে সবাই পূজার উৎসব পালন করতে পারে। দুর্গা পূজার সরকারি ছুটি কবে থেকে শুরু হবে ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়া যা দেবীপক্ষের সূচনা হিসেবে পালিত হয়। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে নবরাত্রি এবং তারই অংশ হিসাবে একের পর এক পূজা অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষ করে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমী দিনগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গে পালিত হয়।
দুর্গ পুজার অনুষ্ঠান ও সাজসজ্জা
দুর্গা পূজার বাংলার সবচেয়ে বড় ও প্রাণবন্ত উৎসবগুলোর একটি। এটি ধর্ম, সংস্কৃতি এবং সামাজিক মিলনের সমন্বয়। পূজার মূল আকর্ষণ হলো মণ্ডপে দেবী দুর্গার প্রতিমা যা মনোমুগ্ধকর আলোকসজ্জা ও রঙ্গিন সাজসজ্জায় ভরা থাকে। প্রতিটি মণ্ডপ বিশেষ থিম এবং শৈল্পিক কৌশল সাজানো হয় যা দর্শনার্থীদের মোহিত করে। মহিলারা এই সময় সাধারণত ঐতিহ্যবাহী শাড়ি পরিধান করেন। যা লাল, হলুদ বা সোনালী রঙের হয়ে থাকে।
শাড়ির সঙ্গে গহনা চুরি এবং হালকা মেকআপ পূজার আনন্দকে আরও উজ্জ্বল করে। তরুণরা আধুনিক ও ঐতিহ্যবাহী পোশাকের সমন্বয় করে যেমন ধুতি, কামিজ, লেহেঙ্গা সালোয়ার বা পাঞ্জাবি। পুরুষেরাও পায়জামা কুর্তা বা ধুতি পাঞ্জাবি পরে মন্ডপে উপস্থিত হন আর বিশেষ অনুষ্ঠান ও শোভাযাত্রা পোশাকের রং এবং সাজসজ্জায় মনোযোগ দেন। শিশুরা ও পূজার আনন্দে অংশ নেয়। তারা ছোট শাড়ি, লেহেঙ্গা বা ধুতি পাঞ্জাবি পরে মেলায় অংশগ্রহণ করে। যা পূজার পরিবেশকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। পূজার সময় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাচ, গান আনন্দ ও শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এগুলো কেবল দর্শনীয় নয়, সামাজিক মিলনের একটি বড় মাধ্যম।
দেবী দুর্গার মহিলা ও দুর্গা পূজার ইতিহাস
দুর্গাপূজা হিন্দুর ধর্মের অন্যতম প্রধান উৎসব বীরত্বের প্রতিভক্তি প্রকাশের জন্য পালিত হয়। এই উৎসব মূলত মানুষের উপর শত্রু বা অশুভ শক্তির প্রতি বিজয় এবং ধর্মের বিজয় উদযাপনের প্রতীক। প্রাচীন শাস্ত্র ও পুরাণে এই উৎসবের উল্লেখ পাওয়া যায় বিশেষ করে দেবী ভাগবত পুরাণে বলা হয়েছে যে দেবী দুর্গা মহিষাসুর নামক দানবকে পরাস্ত করেছিলেন। মহিষাসুর দীর্ঘ সময় ধরে স্বর্গ পৃথিবী ও প্রাচীন জগতের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছিল।
আরো পড়ুনঃ ২০২৬ সালের ইংরেজি মাসের সকল ক্যালেন্ডার
দেবতরা একত্রিত হয়ে এমন একটি সর্বোচ্চ শক্তি সৃষ্টির করেছিলেন যা হলো দেবী দুর্গা। দেবী দুর্গার দশটি অস্ত্র ও নবদণ্ড শক্তি নিয়ে মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধ করেন দেবীর বীরত্ব ও মহাশক্তির ফলে মহিষাসুরকে পরাজিত করা সম্ভব হয় এবং পৃথিবীতে শান্তি ও সুবিচার ফিরে আসে। এই মহান বিজয় স্মরণে প্রতি বছর শারদীয়া নবরাত্রি সময় দূর্গা পূজা হয় উদযাপিত হয়। পূজা শুধুমাত্র ধর্মীয় আচার নয় এটি বাঙালি সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও সমাজের মিলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মণ্ডপ , প্যান্ডেল ও ঘরে দুর্গার প্রতিমা স্থাপন করে পূজা শুরু হয়। প্রতিটি ঘর বা মণ্ডপে আলোকসজ্জা, ফুলের সাজসজ্জা এবং সংস্কৃতি অনুষ্ঠান উপযোগী আরো প্রাণ বন্ধ করে তোলে। দুর্গা পূজা কেবল দেবীর বীরত্বের স্মরণ নয় এটি মানুষের ভক্তি, সাহস ও ন্যায়ের উদযাপন।
মহালয়া দুর্গোৎসবের সূচনা
দুর্গাপূজার শুরু হওয়া মহালয়া দিয়ে। ভোরে ভক্তরা দেবীর আগমন উপলক্ষে চণ্ডীপাঠ ও বিশেষ পূজা করেন। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে এই দিনে রেডিওতে মহালয়া সম্প্রচার এক ঐতিহ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। ষষ্ঠী তিথিতে দেবীর প্রতিমার চক্ষুদান করা হয়। ঢাকের বাদ্য, নৃত্য আলোকসজ্জা ও মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়ে দেবীকে বরণ করা হয়। সপ্তমী তিথির সকালের নদীর জলে কলাবৌ স্নান করিয়ে মন্ডপে স্থাপন করা হয়। এরপর কলাবৌ পূজা অনুষ্ঠিত হয় যা সপ্তমীর অন্যতম বিশেষ আচার। মহাঅষ্টমী দূর্গা পূজার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। এদিন কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
যেখানে জীবন্ত কুমারী কন্যার মধ্যে দেবীর প্রতিফলন দেখা হয়। সন্ধ্যায় হয় সন্ধিপূজি যা মহিষাসর বনের প্রতীক। নবমী তিথিতে দেবীর মহাশক্তির পূজা হয়। এই দিনে বিশেষ ভোগ রান্না করা হয় এবং ভক্তদের মধ্যে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। দশমী তিথিতে দেবীর বিসর্জন হয়। এদিন মহিলারা সিঁদুর খেলা করেন যা এক বিশেষ সামাজিক আনন্দ উৎসব। বিসর্জনের সময় ভক্তরা একসঙ্গে উচ্চারণ করে "আসছে বছর আবার হবে"
দুর্গা পূজা ২০২৫ সালের সময়সূচি
দুর্গা পূজা হিন্দু ধর্মাবলীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। কেবল দেবী দুর্গা পূজা নয় এটি নারীশক্তি, প্রতিষ্ঠা ও অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীক হিসেবেও পালিত হয়। মহালয়ার মাধ্যমে দূর্গাৎসবের সূচনা ঘটে। এই দিন থেকে দেবীর আগমনে যাত্রা শুরু হয় এবং ভক্তরা আনন্দ ও ভক্তির সঙ্গে দিনগুলো পালন করেন। দুর্গ পুজার সরকারি ছুটি কবে মহাষ্টমী থেকে বিজয়া দশমী পর্যন্ত সময়সূচী নিজে তালিকা আকারে দেখানো হলো।
তারিখ | বার | পূজা দিন |
---|---|---|
২১ সেপ্টেম্বর | রবিবার | মহালয়া |
২৮ সেপ্টেম্বর | রবিবার | মহাষষ্ঠী |
২৯ সেপ্টেম্বর | সোমবার | মহাসপ্তমী |
৩০ সেপ্টেম্বর | মঙ্গলবার | মহাঅষ্টমী |
১ অক্টোবর | বুধবার | মহানবমী |
২ অক্টোবর | বৃহস্পতিবার | বিজয়া দশমী |
নাইস-সল্ভ; আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url