পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় -৮ টি
আপনাদের অনেকেরই পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়। এর অনেকগুলো কারণ রয়েছে আপনারা ঘরে বসেই পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমাতে পারবেন। এই আর্টিকেলে জুড়ে থাকছে পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানো নিয়ে আজকে বিস্তারিত বিষয়।
ঘরে বসে যদি ব্যথা কমানো যায় তাহলে ডাক্তারের কাছে যাবার কি দরকার। এমনই গুরুত্বপূর্ণ ৮টি টিপস আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। যার মাধ্যমে ঘরে বসেই পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমাতে পারবেন। নিম্নে এই ৮টি টিপস নিয়ে আলোচনা করা হলো।
সূচিপত্র: পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
- পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
- পায়ের মাংসপেশির ব্যথার কারণ ও প্রাকৃতিক লক্ষণ
- গরম সেঁক দিয়ে পায়ের ব্যথা কমানোর কার্যকরী পদ্ধতি
- ঠান্ডা পানির সেঁক ব্যবহার করে মাংসপেশি শীতল করা
- হালকা ব্যায়াম ও স্ট্রচিং ব্যথা কমানোর সহজ উপায়
- পর্যাপ্ত পানি পান ও পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব
- ঘুম ও বিশ্রামের মাধ্যমে মাংসপেশি পুনরুদ্ধার
- ম্যাসাজ ও নারকেল তেল ব্যবহারের ঘরোয়া উপায়
- কবে ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন
- লেখকের শেষ কথা: পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
আমাদের শরীরের সুস্থতা অনেকটাই নির্ভর করে পায়ের উপর। প্রতিদিন হাঁটা চলা বা কাজকর্ম করার কারণে অনেকেরই হঠাৎ করে পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়ে থাকে। তাই ঘরে বসে পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে জানুন। দীর্ঘ সময় হাঁটা অতিরিক্ত ব্যায়াম কিংবা পর্যাপ্ত বিশ্রামের কারণে পায়ের পেশীতে টান ধরে ও ব্যথা দেখা দেয়। এ সময় ওষুধের পরিবর্তে অনেকেই ঘরে বসে প্রাকৃতিক উপায়ে পায়ের মাংসপেশীতে ব্যথা কমানোর চেষ্টা করেন। কারণ ঘরোয়া উপায়গুলো সাধারণত নিরাপদ এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত। বিশেষজ্ঞরা বলেন গরম বা ঠান্ডা সেঁক দেওয়া পর্যন্ত পানি পান করা এবং হালকা স্ট্রেচিং করা হলো পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় জেনে নিন।
একই সঙ্গে পর্যাপ্ত ঘুম এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস ও পেশীর শক্তি ও নমনীয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলে ভবিষ্যতে এমন সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। অনেক সময় ব্যাথা হালকা করেন সাধারণ ম্যাসাজ বা না সরিষার তেল ব্যবহার করলে আরাম পাওয়া যায়। তাই অনেকে বিশ্বাস করেন প্রাকৃতিক টিপসগুলো হলো পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সবচেয়ে সহজ সমাধান। আর নিয়মিত যত্ন নিলে এই ব্যথা থেকে দীর্ঘমেয়াদী মুক্ত পাওয়া যায়। আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো কোন কোন ঘরোয়া উপায় বাস্তবের কার্যকর এবং কিভাবে সেগুলো কাজে লাগিয়ে পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় ভালো ফল পাওয়া যায়। আপনি যদি ওষুধ ছাড়া প্রকৃতির উপায়ে আরাম পেতে জানতে হবে আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পায়ের মাংসপেশির ব্যথার কারণ ও প্রাকৃতিক লক্ষণ
পায়ের মাংসপেশির ব্যথার কারণ ও প্রাকৃতিক লক্ষণ সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী কারণ এটি বুঝতে পারলেই সঠিক সময়ে প্রতিকার নেওয়া সম্ভব হয়। সাধারণত অতিরিক্ত হাঁটা, ভারী জিনিস বহন করা, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকা এবং হঠাৎ তীব্র ব্যায়াম করার ফলে পায়ের মাংসপেশিতে টান ধরে ব্যথা শুরু হয়। অনেক সময় পর্যাপ্ত পানি না খাওয়ায় শরীরে ডিহাইড্রেশন তৈরি হয়, যা পেশীর সংকোচন ও ব্যথার অন্যতম কারণ। আমার ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়ামের অভাব এধরনের ব্যথা দেখা দেয়। প্রাথমিকভাবে এই ব্যাথা সাধারণত টান বা ঝিম ধরা অনুভূতির মতো মনে হয়।
ধীরে ধীরে হাঁটার সময় অস্বস্তি, পেশীতে শক্ত হয়ে যাওয়া বা চাপ দিলে ব্যথা বেড়ে যাওয়া দেখা যায়। কখনো কখনো রাতে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ পেশীতে ক্র্যাম্প ধরতে পারে যা অনেককে আতঙ্কিত করে তোলে। এছাড়া পায়ের মাংস বেশি ফুলে যাওয়া বা অতিরিক্ত গরম লাগা থাকলেও সেটি ব্যথার সতর্কবার্তা হতে পারে। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রাথমিক লক্ষণগুলো দ্রুত চিহ্নিত করা গেলে ঘরোয়া উপায়েই আরাম পাওয়া সম্ভব। হালকা স্ট্রেচিং, পানি পান এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলে ব্যথা ধীরে ধীরে কমে আসে। তাই পায়ের মাংসপেশির ব্যথার কারণ ও প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকাই সুস্থ থাকার প্রথম মাধ্যম।
গরম সেঁক দিয়ে পায়ের ব্যথা কমানোর কার্যকরী পদ্ধতি
গরম সেঁক দিয়ে পায়ের ব্যথা কমানোর কার্যকরী পদ্ধতি বহুদিন ধরে ঘরোয়া সমাধান হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। পেশীতে অতিরিক্ত চাপ পড়লে সেখানে রক্ত সঞ্চালন কমে যায়, ফলে ব্যথা ও শক্ত হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। গরম সেঁক দিলে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হয় এবং পেশীর টান ধীরে ধীরে কমে আসে। এ কারণে অনেক বিশেষজ্ঞ পায়ের মাংসপেশীর ব্যথা প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে গরম সেঁকের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। গরম সেঁক দেওয়ার জন্য একটি তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে ভালোভাবে নিংড়ে ব্যথাযুক্ত স্থানে লাগাতে পারেন। আবার আপনি চাইলে বাজারে পাওয়া যায় এমন হট ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার করতেও পারেন।
প্রতিবার ১০ থেকে ১৫ মিনিট ধরে গরম সেঁক দিলে বেশি আরাম পাওয়া যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে পানি যেন অতিরিক্ত গরম না হয়। তাহলে ত্বক পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে। গরম সেঁক কেবল ব্যথা কমায় না এটি মাংসপেশিকে শিথিল করে এবং ফুলে যাওয়া প্রবণতাও হ্রাস করে। বিশেষ করে যাদের হাঁটার পর বা দীর্ঘ সময় কাজ করার পর হঠাৎ করে পেশীতে টান ধরে যায় তাদের জন্য এটি দ্রুত আরামদায়ক সমাধান। তবে ব্যথা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা সঙ্গে ফোলা, লালচে ভাব,জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দেয় সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী। নিয়মিত যত্নের অংশ হিসেবে গরম শেখ একটি সহজ ও কার্যকরী ঘরোয়া উপায়।
ঠান্ডা পানির সেঁক ব্যবহার করে মাংসপেশি শীতল করা
ঠান্ডা পানি সেঁক ব্যবহার করে মাংসপেশি শীতল করা একটি বহু প্রচলিত ঘরোয়া উপায়। যখন পায়ের মাংসপেশিতে হঠাৎ টন ধরে যায় বা অতিরিক্ত হাটা দৌড়ানো কিংবা ভারী কাজের কারণে ব্যথা শুরু হয়। তখন ঠান্ডা সেঁক অনেক দ্রুত আরাম এনে দেয়। এটি মূলত আক্রান্ত স্থানে প্রদাহ কমায় এবং পেশীর অস্বস্তি দূর করতে সহায়তা করে। ঠান্ডা সেঁক দেওয়ার জন্য বরফকুচি একটি কাপড়ে মুড়ে ব্যথার জায়গায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট ধরে হালকাভাবে চেপে ধরতে হয়। আবার ঠান্ডা পানি ভর্তি বোতল বাম বাজারে পাওয়া যায় এমন আইস প্যাক ও ব্যবহার করা যায়। এক্ষেত্রে সরাসরি বরফ ত্বকের উপর ব্যবহার করা উচিত নয় কারণ এতে চামড়া জমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
ঠান্ডা পানির সেঁক কেবল ব্যথা কমায় না, এটি ফুলে যাওয়া বা প্রদাহযুক্ত জায়গাকে স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে খেলাধুলায় অংশ নেওয়ার পর কিংবা হঠাৎ দুর্ঘটনার জনিত আঘাতে পায়ের পেশীতে ব্যথা শুরু হলে এই উপায়টি বেশ কার্যকর। নিয়মিত গরম সেঁকের পাশাপাশি বিকল্প ভাবে ঠান্ডা সেঁক ব্যবহার করে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা যায়। মনে রাখতে হবে, যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা একসাথে লাল যে ভাব বা অতিরিক্ত ফোলা দেখা দেয় তাহলে শুধু ঠান্ডা সে কি সমাধান নাও হতে পারে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। তবুও প্রথমে পর্যায়ে ঠান্ডা পানির সেঁক ব্যবহার করে মাংসপেশি শীতল করা একটি সহজ ও নিরাপদ সমাধান।
হালকা ব্যায়াম ও স্ট্রচিং ব্যথা কমানোর সহজ উপায়
হালকা ব্যায়াম ও স্ট্রচিং ব্যথা কমানোর সহজ উপায় হিসেবে এটি অনেক বিশেষজ্ঞের প্রথম পরামর্শ। দীর্ঘ সময় বসে থাকা বা একটানা কাজ করার কারণে পায়ের মাংসপেশি শক্ত হয়ে যায় ফলে ব্যথা শুরু হয়। এসময় হালকা ব্যায়াম ও সঠিক স্ট্রেচিং করলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং মাংসপেশি ধীরে ধীরে শিথিল হয়। স্ট্রেচিং করার জন্য খুব বেশি সময় বা জটিল কোনো সরজ্ঞামের প্রয়োজন হয় না।
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠার পর এবং রাতে শোবার আগে কয়েক মিনিটের জন্য হালকা স্ট্রেচিং করা যেতে পারে। যেমন পায়ের আঙ্গুল সামনের দিকে টেনে ধরা , পায়ের গোড়ালি উঠানো নামানো কিংবা হাঁটু ভাঁজ করে সোজা করা। এসব অনুশীলন মাংসপেশির নমনীয়তা বাড়ায় এবং ব্যথা দ্রুত কমাতে সাহায্য করে। হালকা হাঁটু বা সাইক্লিং ও ব্যথা কমানোর জন্য হতে পারে।
এগুলো পায়ের পেশীকে সক্রিয় রাখে এবং অতিরিক্ত শক্ত হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে। তবে মনে রাখতে হবে ব্যথা থাকলে ভারী ব্যায়াম বা দৌড়ঝাঁপ এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এতে সমস্যর মাত্রা আরও বাড় পারে। অনেক সময় ব্যাথা কমানোর পাশাপাশি নিয়মিত স্ট্রেচিং করলে ভবিষ্যতে পায়ের মাংসপেশিতে টান ধরা বা ক্র্যাম্প হওয়ার সম্ভাবনা ও কমে যায়। তাই ওষুধ ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে আরাম পেতে হালকা ব্যায়াম ও স্ট্রচিং হতে পারে সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ সমাধান।
পর্যাপ্ত পানি পান ও পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব
পর্যাপ্ত পানি পান ও পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব পায়ের মাংসপেশির সুস্থতায় অত্যন্ত বেশি। শরীরে পানি ঘাটতি হলে মাংসপেশি দ্রুত ও শক্ত হয়ে যায়। ফলে ব্যথা ও ক্র্যাম্প শুরু হয়। বিশেষ করে গরমের দিনে ঘাম ঝরার কারণে শরীরের দিকে প্রচুর পানি ও লবণ বের হয়ে যায়। এ সময় পর্যন্ত পানি না খেলে পেশীতে টান ধরা স্বাভাবিক ব্যাপার। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত। এছাড়া পুষ্টিকর খাবার মাংসপেশিকে শক্তিশালী রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন ডি পেশীর স্বাভাবিক কার্যকারিতার জন্য অপরিহার্য। দুধ, ডিম, কলা, শাকসবজি, ডাল, বাদাম এবং মাছ নিয়মিত খেলে পায়ের মাংসপেশির ব্যথা অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। একই সঙ্গে অতিরিক্ত তেল চর্বিযুক্ত ও ভাজা খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এগুলোর রক্তসঞ্চালন বাধাগ্ৰস্ত করে ব্যথা বাড়াতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় শুধু পানি পান ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারনে দীর্ঘদিনের মাংসপেশির ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই চিকিৎসাকের পরামর্শের পাশাপাশি নিজের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
ঘুম ও বিশ্রামের মাধ্যমে মাংসপেশি পুনরুদ্ধার
ঘুম ও বিশ্রামের মাধ্যমে মাংসপেশি পুনরুদ্ধার যে একটি প্রাকৃতিক এবং কার্যকর উপায়। আমাদের শরীর দিনের পর দিন বিভিন্ন কাজের চাপ বহন করে চলে। হাঁটা, দৌড়ানো, ভারী কাজ করা কিংবা দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকা এসব কারণে পায়ের মাংসপেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং ব্যথা সৃষ্টি হয়। এই ব্যথা দূর করার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম ও সঠিক বিশ্রামের বিকল্প নেই। রাতে অন্তত ৬ থেকে ৮ ঘন্টা গভীর ঘুম পেলে শরীরের ভেতরের বেশি কোষগুলো স্বাভাবিকভাবে পুনর্গঠন হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু মেরামত হয় এবং পেশীতে নতুন শক্তি ফিরে আসে।
ঘুমের সময় শরীর হরমোন নিঃসরণ করে যা ব্যথা কমাতে এবং মাংসপেশিকে পুনরুজ্জীবিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশ্রামের জন্য দিনে কিছু সময় পা উঁচু করে শোয়া যেতে পারে এতে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় এবং পেশীতে জমে থাকা টান ধীরে ধীরে কমে যায়। যাদের কাজের চাপ বেশি তারা নিয়মিত বিরতিতে কয়েক মিনিট বিশ্রাম নিলে মাংসপেশির ব্যথা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। অতিরিক্ত জেগে থাকা মানসিক চাপ এবং অনিয়মিত জীবনযাপন পেশীর পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্ৰস্ত করে। তাই সময়মতো ঘুমানো এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া খুবই জরুরী।
ম্যাসাজ ও নারকেল তেল ব্যবহারের ঘরোয়া টিপস
ম্যাসাজ ও নারকেল তেল ব্যবহারের ঘরোয়া টিপস দীর্ঘদিন ধরে পায়ের মাংসপেশির ব্যথা কমানোর সহজ সমাধান হিসেবে এটি একটি জনপ্রিয়। নিয়মিত ম্যাসাজ করলে রক্তসঞ্চালন বাড়ে ফলে পেশীতে জমে থাকার টান বা শক্তভাব দূর হয় তাদের হালকা ম্যাসাজ বেশ কার্যকর। নারকেল তেল প্রাকৃতিকভাবে প্রদাহনাশক এবং আরামদায়ক গুনে ভরপুর। এতে থাকা ভিটামিন ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান পেশীকে শীতল করে এবং ব্যথা দ্রুত কমাতে সাহায্য করে। ব্যবহার করার জন্য নারকেল তেল হালকা গরম করে ব্যথাযুক্ত জায়গায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট আলতোভাবে ম্যাসাজ করতে হয়।
এটি শুধু ব্যথা দূর করে না পেশীকে নরম ও নমনীয় করতে ও সহায়তা করে। ম্যাসাজ করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। হালকা চাপ দিলে গোল গোল ঘূর্ণনের মতো করে ম্যাসাজ করলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। আবার আপনি চাইলে লেবু বা আদার রস মিশিয়ে নারকেল তেলের সাথে ব্যবহার করলে আরও দ্রুত ফল পাওয়া যায় কারণ এগুলো বেশি সহায়তা করে। সবচেয়ে ভালো ফলাফল এর জন্য রাতে শোয়ার আগে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে এতে ঘুমের সময় মাংসপেশি আরাম পায় এবং সকালে পা হালকা লাগে।
কবে ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন
কবে ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন তা জানা অত্যন্ত জরুরী কারণ পায়ের মাংস পেশিতে ব্যথা সাধারণত সহজ ঘরোয়া পদ্ধতিতে কমানো যায় তবে কখনো কখনো এটি গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত ও হতে পারে। যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং কয়েক দিনের মধ্যে আরাম না দেয় তা হলে তা গুরুত্বের সাথে দেখা উচিত। ডাক্তার দেখানোর জন্য কিছু সতর্ক লক্ষণ রয়েছে যেমন পায়ের পেশীতে হঠাৎ বা তীব্র ব্যথা, চড়া ফেরার অসুবিধা, পা ফুলে যাওয়া, লালচে ভাব বা তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া। তাছাড়া ব্যথার সঙ্গে জ্বর, দুর্বলতা বা অনুভূতিহীনতা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারণ এ ধরনের উপসর্গ পেশী, স্নায়ু বা রক্ত সংক্রান্ত কোনো সমস্যার সংকেত দিতে পারে।
যাদের হার বা জয়েন্টের সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে পেশী ব্যথা গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। তাই নিজের শরীরের অবস্থায় প্রতি সচেতন থাকা দরকার। প্রাথমিক পর্যায়ে ঘরোয়া যেমন গরম বা ঠান্ডা সেঁক, হালকা ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম কার্যকর হলেও যদি ব্যথা দীর্ঘয়িত হয় তখন ডাক্তার দেখানো গুরুত্বপূর্ণ। সতর্কতা মেনে সময় মত চিকিৎসা নেওয়া গেলে গুরুতর সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় তাই পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঘরোয়া পদ্ধতি প্রয়োগের পাশাপাশি শরীরের প্রতিটি সতর্ক লক্ষণকে উপেক্ষা না করে অত্যন্ত জরুরী। নিয়মিত নজরদারি এবং প্রয়োজনমতো চিকিৎসা নিশ্চিত করে পেশীর স্বাভাবিক কার্যকারিতা বজায় রাখা সম্ভব।
লেখকের শেষ কথা: পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় শুধু ব্যথা উপশমের মাধ্যম নয় এটি একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অংশ নিয়মিত যত্ন, পর্যাপ্ত ঘুম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও সামান্য ব্যায়ামে আপনার পেশীগুলোকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারে। প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে নিজেদের জন্য একটু সময় বের করা হালকা ম্যাসাজ বা গরম সেঁক নেওয়া এসব ছোট ছোট পদক্ষেপ বড় পরিবর্তন আনতে পারে। মনে রাখতে হবে পেশীর ব্যথা অবহেলা করা উচিত নয়। শুরুতেই যত্ম নিলে বড় সমস্যা হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধ কর সম্ভব। তাই ওষুধের উপর নির্ভর না করে আজ থেকে শুরু করুন পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়। প্রাকৃতিক যত্নে ফিরে পান ব্যথামুক্ত, স্বস্তিদায়ক ও সুস্থ জীবন। ধন্যবাদ

নাইস-সল্ভ; আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url